Wednesday, 31 August 2016

বিপদে না পড়লে বন্ধু চেনা যায় না

২০১৪ সালের এপ্রিল মাসের দিকে আমাকে যখন টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে দু দু'বার টর্চার করে ছেড়ে দেওয়া হয়; তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম আমার কাছের লোকগুলো কারা। তখন আমি দেখেছিলাম আমার কাছের লোকগুলোর মধ্যে আমার গর্ভধারীনি মা, আমার স্ত্রী, আমার ২ বোন, আমার ১ শিক্ষাগুরু ও আমার ন্যাংটা কালের ২ বন্ধু ছাড়া আমার পিছনে আর কেউ ছিলো না। আসলে বিপদে না পড়লে বন্ধু চেনা যায় না। পরের মাসে দেখলাম মা আমার জন্য রোজা করছেন। তার নাকি মানত ছিলো, ছেলে বিপদ থেকে উদ্ধার হলে ২ টা রোজা করবেন। ওহ মা তোমার তুলনা হয়না। তোমার তুলনা শুধু তুমিই।

আমার বিপদের দিনগুলোতে আমি যেখানে আত্মগোপন করে ছিলাম সেখানে আমার স্ত্রী আমার সাথে গোপনে দেখা করেছে, আমাকে সাহস জুগিয়েছে, বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য নানা রকম ডকুমেন্টস সংগ্রহ করেছে এবং সেগুলো সময় মত আমার কাছে পৌঁছে দিয়ে আমাকে সহায়তা করেছে। তার সহযোগিতা আমার কাছে ভোলার নয়। তাই আমার কাছে তার মর্যাদাও অনেক উপরে। আমার স্ত্রীর মত লক্ষ্মী স্ত্রী যেন বাংলাদেশের সকল ঘরে ঘরে থাকে, এই আমার কামনা। পাশাপাশি তার স্বামীরাও যেনো তাকে অকৃত্রিম ভালোবাসা দেয়, এটাও আমি সর্বাত্মকভাবে কামনা করি। আমি অনেক লক্ষ্য করে দেখেছি যে, আমরা পুরুষ জাতি আমাদের স্ত্রীদের যেটুকু ভালোবাসা দিই ফেরত পাই তার দ্বিগুনের চেয়ে বেশি। ( অবশ্য কিছু ব্যতিক্রম ও থাকতে পারে। আমি এমন স্ত্রীলোক ও দেখেছি যাকে তার স্বামী প্রতিনিয়ত অকৃত্রিম ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছে, বিনিময়ে স্ত্রীর কাছে থেকে স্বামী পাচ্ছে শুধু অবহেলা আর লাঞ্ছনা। ধিক সেসব নারীর প্রতি যারা এমন আচরণ করে। )
 
ঐ সমসাময়িক কালের এক সকালে আমার ঐ ২ বন্ধু আমাকে বাসা থেকে আস্তে করে ডাকলেন। জানালেন আমার শত্রুরা  কিভাবে আমার ক্ষতি করার পরিকল্পণা করছেন। তথ্যগুলো সঠিক ছিলো। আমি সেই মোতাবেক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তাই তারা আমার বিশেষ ক্ষতি করতে পারেনি। স্যালুট আমার ঐ ২ ন্যাংটা কালের বন্ধুদের।

আমি ওই মাসের আগ পর্যন্ত ও তাদের সাধারণ মানুষ হিসেবে সম্মান-শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু ওই মাস থেকে আমি তাদের মহামানব ( আমার কাছে মহামানব ) মনে করি। তখন থেকে আমি তাদের অন্তঃআত্মা দিয়ে ভালোবাসি। একেবারে নিখুঁত ভালোবাসা। যে ভালোবাসার মাঝে কোনো খাঁদ নাই। তাই আমাদের সবার উচিত সম্ভাব্য কাছের লোকগুলোর সাথে একটু বিশেষ সদ্ভাব রাখা; যারা বিপদের দিনে আমাদের / আমার কাজে আসতে পারে।

Tuesday, 30 August 2016

আমার পরিচয়

আমি একজন সাধারণ মানুষ ( Simple Man X )। বাড়ি বাংলাদেশে। চার ভাই বোনের মধ্যে আমি বাবা মায়ের ৩য় সন্তান।  আমি ১৯৯৫ সালে এস এস সি, ১৯৯৭ সালে এইচ এস সি, ১৯৯৯ সালে বি এস সি এবং ২০০৩ সালে মাস্টার্স পাস করি। আমার আরো ২ টি ডিগ্রি আছে যা আমার মূল পেশার সাথে রিলেটেড। তাই আমি তা প্রকাশ করি না। প্রকাশ করতে ভালোও লাগে না। আমার লেখায় আমি কখনও দিন মজুর, কখনও জেলে, কখনও ডাক্তার, কখনও চাকুরিজীবি, কখনও বা লাঞ্ছিত মানব হয়ে আগমন করি।

আমার ভালোলাগা কথাগুলো আমি আমার ব্লগে স্থান দিই। যখন আমি একা থাকি তখন নিজের ভালোলাগা কথাগুলো পড়ি। অনেক সত্য কথা আমার বলতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি বলতে পারি না। এদিক থেকে আপনারা বলতে পারেন আমি একজন ভীতু লোক। আমার সহকর্মীরাও তাই মনে করে। সত্য কথা বলতে আমাকে অনেকে উৎসাহিত করে। উৎসাহ পেয়ে আমি অনেক সত্য কথা বলেছি। তার পরে পড়েছি মহা বিপদে। বিপদের দিনগুলোতে উৎসাহদাতারা কেউ আমার পাশে এসে দাঁড়ায়নি। তাই বাধ্য হয়ে নিজের এই ছোট প্রাণটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য পালিয়েও বেড়িয়েছি। আর আল্লাহ তায়ালার দেওয়া মেধাশক্তি প্রয়োগ করে সেসব বিপদ থেকে মুক্তিও পেয়েছি।

আমার ব্লগে আমি যা লিখি তা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, নিজস্ব চিন্তা চেতনা ও কল্পনা থেকে লিখি। আমার ব্লগের লেখাগুলো কোথাও থেকে কপি করা নহে । আবার কারো লেখা সম্পাদনা করাও নহে। আমি সাধারণত আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন মাত্রার লেখা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবো।