Monday, 5 September 2016

স্বামীকে দীর্ঘজীবি করতে স্ত্রীকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে

আমাদের গ্রামে আমি খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখেছি যে, এখানে অনেক বিধবা মহিলা আছে। যার তুলনায় বিপত্নীক পুরুষ লোক অত্যন্ত নগন্য। আবার এ ও লক্ষ্য করেছি যে, বিধবা মহিলারা বিধবা হওয়ার পর আর কোনো বিয়ে করছে না। অবশ্য কিছু কম বয়সী শিক্ষিত ও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী বিধবা মহিলা বিধবা হওয়ার পর ও দ্বিতীয় বিয়ে করছে; যেটা আমাদের সমাজে খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু পুরুষ লোক বিপত্নীক হওয়ার পর পরই আবার বিয়ে করছে। নতুনভাবে সংসার করছে। কিছু কিছু পুরুষ লোকও আছে যারা বিপত্নীক হওয়ার পরও বিয়ে করে না; এটাও আমাদের সমাজে খুব কমই দেখা যায়। যাই হোক আমি বলতে চাচ্ছি, আমাদের দেশে পুরুষ লোকের চেয়ে মহিলারাই বেশি দিন বাঁচে। আমি এর কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছি। এই বিষয়টা নিয়ে আমি আমার আম্মাজানের সাথে ও কথা বলেছি। আমার কথার সাথে আম্মাজান একমত পোষণ করেছেন। তিনি এ ও বলেছেন যে, বিয়ের সময় ছেলের বয়স মেয়ের বয়েসের চেয়ে সাধারণত বেশি থাকে; এর জন্যই যে বিধবা মহিলার সংখ্যা বেশি তা কিন্তু নয়। এর প্রধান কারণ হলো, পুরুষেরা মেয়েদের চেয়ে কঠিন পরিশ্রম বেশি করে। যার কারণে তাদের শরীরের ক্ষয় ও হয় বেশি। তাই তারা মহিলাদের তুলনায় আগেই মৃত্যু বরণ করে। যার কারণে, বিপত্নীক পুরুষের তুলানায় বিধবা মহিলাদেরই আমরা আমাদের সমাজে বেশি দেখতে পাই। আপনি আমার সাথে একমত না ও হতে পারেন। একমত না হলে আমার করার কিছু নাই। কারণ, আমি যা বলছি এটাই বাস্তব।

একটি সংসারে যখন উপার্জনক্ষম পুরুষ লোকটি মারা যাচ্ছে তখন কে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে? মৃত পুরুষ লোকটি না বিধবা মহিলাটি? নিঃসন্দেহে বিধবা মহিলাটি। কারণ, যে পুরুষ লোকটি মারা গেলো সে তো মরেই বেঁচে গেলো। আর যে মহিলাটি বেঁচে থাকলো সে মরার মত বেঁচে রইলো। তাকে এখন ভাবতে হবে অন্নের কথা, বস্ত্রের কথা, বাসস্থানের কথা, সামাজিক নিরাপত্তার কথা ইত্যাদি। এক কথায়, তার আর্থিক অবস্থা ভালো না হলে তাকে সমাজে ঠোকর খেয়ে খেয়ে বেঁচে থাকতে হবে।

পক্ষান্তরে, উপার্জনক্ষম পুরুষ লোকটি বেঁচে থাকলে তার স্ত্রীকে অত কঠিন পরীক্ষার সম্মূখীন হতে হয় না। তাহলে কি করা উচিত? হা আমি বলতে চাই, সংসারে স্ত্রীলোকদের উচিত তার স্বামীর প্রতি যত্নবান হওয়া। স্বামী যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন তাকে কোনো কঠিন সমস্যার সম্মূখীন হতে হবে না। স্বামীর শারীরিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখা, পোশাক-পরিচ্ছদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ খবর রাখাও স্ত্রীকেই রাখতে হবে। আমার মতে যার স্ত্রী যত বেশি স্বামীর যত্ন নেয়, তার স্বামী তত স্মার্ট হয়। স্ত্রী যদি তার স্বামীর যত্ন বেশি নেয়, তাহলে তার স্বামী বেশি দিন বাঁচবে এটাই স্বাভাবিক। আপনার লক্ষ্য করে দেখবেন, এই সমাজ সংসারে যে জিনিসটাকে যত বেশি যত্নে রাখা হয়, সে জিনিসটা তত বেশি টেকসই হয়। তাই, স্বামীকে দীর্ঘজীবি করতে স্ত্রীকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। 

No comments:

Post a Comment